সংক্ষিপ্ত উত্তর:
ঈসায়ীদের কবরে কিছুই জিজ্ঞাসা করা হবে না, কারণ তারা অনন্ত জীবনের নিশ্চয়তা পেয়েছে।
ব্যাখ্যামূলক উত্তর:
কবরে কী হবে, এনিয়ে মানুষের জিজ্ঞাসার অন্ত নেই। অনেকে ধারণা করেন, কবরে আজাব হয়। ইসলামি চিন্তা অনুযায়ী দুনিয়াতে বেঁচে থাকতে সঠিক ধর্মে ঈমান না আনলে এবং ভালোকাজ না করলে, শেষবিচারের আগেই কবরে বেশকিছু শাস্তি ভোগ করতে হয়। সেই শাস্তি খুবই ভয়াবহ। সেখানে মুনকির এবং নকির নামে দু’জন ফেরেশতা বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করবেন; উদাহারণস্বরূপ সেই প্রশ্নগুলো হলো, “মান রাব্বুকা”, “মান দীনুকা”, “মান নবিওকা” অর্থাৎ তোমার প্রভু কে? তোমার ধর্ম কী এবং তোমার নবি কে ইত্যাদি। ইসলাম অনুযায়ী সেই প্রশ্নগুলোর যথার্থ উত্তর আরবি ভাষায় দিতে না পারলে, মানুষকে দুঃসহ শাস্তি ভোগ করতে হবে। এর ফলে, মৃত্যুর পর কবর আজাব নামে যে কঠিন শাস্তির কথা শোনা যায়, তাতে মানুষ খুবই ভয় পায়।
এই প্রশ্ন যে বা যারা করেন, তাদের মনে উপরিউক্ত বিশ্বাস আছে বলে, ঈসায়ীদের এই ধরনের প্রশ্ন করেন। এই প্রশ্নের সরাসরি উত্তর হলো, ঈসায়ীদের বিশ্বাস অনুসারে তারা কবরে কোন প্রশ্নের সম্মুখীন হবে না। কারণ তারা বিশ্বাস করে যে, যেহেতু হজরত ঈসা তাদের শাস্তি গ্রহণ করেছেন, সেহেতু মৃত্যুর পর শেষ বিচারের আগে কবরের মধ্যে কোন বিচার হবে না। এর কারণ হলো, কবর বিচারের জায়গা নয়। শেষবিচারের দিনই আল্লাহ সকলের বিচার করবেন। এই জন্য পাককিতাবের ইবরানি ৯:২৭ আয়াতে লেখা আছে, “আল্লাহ ঠিক করে রেখেছেন যে, প্রত্যেক মানুষ একবার মরবে এবং তারপরে তার বিচার হবে।” এই আয়াতে খুবই স্পষ্ট যে, মানুষের বিচার দুবার নয়, একবারই হবে এবং তা হবে রোজ হাশরে। আর যদি ঈমানদারদের মধ্যে কারো প্রশ্নের সম্মুখীন হতেই হয়, তবে তার উত্তরও যথার্থ আছে। ঈসায়ীদের উত্তরস্বরূপ পাককিতাবে লেখা আছে, “আল্লাহ মাত্র একজনই আছেন এবং আল্লাহ ও মানুষের মধ্যে মধ্যস্থও মাত্র একজন আছেন, সেই মধ্যস্থ হলেন মানুষ মসীহ ঈসা” (১ তীমথিয় ২:৫ আয়াত)। আর সেই মধ্যস্থ নিজের জীবন দিয়ে তাদের সকল উত্তর দিয়েছেন। সুতরাং তারা বিচার থেকে পার হয়ে গেছে।
ঈসায়ীদের বিশ্বাস হলো, মৃত্যুর পর স্বাভাবিক নিয়মেই মানুষের দেহ পচে গলে মাটিতে মিশে যায়। সকল মানুষের দেহের বেলাই তা হয় এবং মানুষের রুহ শেষবিচারের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে।