সংক্ষিপ্ত উত্তর:
না, একজন ঈসায়ী যা খুশি তা করতে পারে না।
ব্যাখ্যামূলক উত্তর:
একজন ঈসায়ী কেন, যেকোন লোকই যা খুশি তা করতে পারে। মানুষ হিসেবে এটি প্রত্যেকের স্বাধীনতা। এখন কথা হলো, সে তা করবে কি না কিংবা করলে তার পরিণাম কি হবে, তা-ই আলোচনার বিষয়। হজরত ঈসার উপর ঈমান আনলে একজন গুনাহগার মানুষের সকল গুনাহ মাফ হয়। হজরত ঈসার কোরবানি অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের সকল গুনাহর মাগফেরাত এনে দেয়। তাই ধারণা করা হতে পারে যে, একজন ঈসায়ীর গুনাহ করতে বাধা নেই।
না, এই ধারণা ও শিক্ষা কোন ক্রমেই সঠিক নয়। সত্যিকারের একজন ঈসায়ী জীবনের পথে চলতে চলতে হঠাৎ পা পিছলে গুনাহর মধ্যে পড়ে যেতে পারে কিন্তু গুনাহর পথে চলতে পারে না। হজরত ঈসা বলেন, ‘আমি উত্তম মেষপালক’। অর্থাৎ আমরা তথা তাঁর উম্মতেরা হলাম মেষ বা ভেড়া। মহিষ পানির ভিতর ডুবে থাকে আর ভেড়া পা-পিছলে পানি বা কাদায় পড়লে ওঠার জন্য ছটফট করে। ঈসার উম্মতেরাও গুনাহ সহ্য করতে পারে না, তারা মেষের মতোই ছটফট করে উঠে আসে, তওবা করে, গুনাহ ত্যাগ করে এবং নতুন জীবনের পথে চলে। হজরত ঈসা বলেন, “আমি মুসার শরিয়ত বাতিল করতে আসিনি বরং পূর্ণ করতে এসেছি।” এথেকে বোঝা যায়, শরিয়তের বিধিবিধানগুলো মেনে চলা ঈসার উম্মতদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। মসীহের সাহাবিরা জীবনের সুন্দর পথে চলতে চলতে তাদের নিজের জীবনকে উৎসর্গ করতেন এবং সমাজের সদস্যদের সুন্দর ও কিতাবি পথে চলতে উদ্বুদ্ধ করতেন।
ইঞ্জিল শরিফ হজরত ঈসার উম্মতদের বলে, ‘তোমাদের আরো কঠিন বিচার হবে’। কিতাবের শিক্ষা অনুযায়ী ঈসায়ীদেরও বিচার হবে। আর সেই বিচার আমাদের ভালমন্দ কাজের বিচার। আমাদেরও মসীহের সামনে দাঁড়াতে হবে এবং আমরা কে কী করেছি তার বিচার তিনি করবেন। যারা গুনাহর পথ থেকে ফিরে মসীহের পথে এসেছেনে এবং পুনরায় সেই পথে ফিরে গেছেন তাদের হজরত ঈসার সাহাবি পিতর, কুকুর ও শুকরের সাথে তুলনা করেছেন। হজরত পৌল এই ধরনের ঈমানদারদের কাছ থেকে সাবধান থাকার কথা বলেছেন। ঈমানের সাথে যাদের কাজের মিল নেই, তাদের সম্পর্কে হজরত ইয়াকুব বলেন যে, তাদের ঈমান মৃত।
অতএব, একজন ঈসায়ী ঈমানদার যা খুশি তাই করতে পারে না। তাকে ঈসায়ী ঈমান অনুসারেই মসীহের নির্দেশিত পথে জীবন যাপন করতে হয়। মসীহ যেমন নিষ্পাপ ছিলেন, তেমনি তাঁর উম্মতেরা সত্য ও সুন্দরের পথে পরিচালিত হবে, এটা স্বাভাবিক বিষয়।