সংক্ষিপ্ত উত্তর:
ঈসায়ীরা পাকসাফ হওয়ার জন্য বাহ্যিক কিছুর উপর নির্ভর করে না।
ব্যাখ্যামূলক উত্তর:
ইসলামি অজু পাকসাফ হওয়ার প্রতীক। প্রত্যেক মুসলমান নামাজ বা কোরান পড়ার আগে অজু করেন। কথিত আছে, অজু সঠিক না হলে, তার কোন ধর্মকর্মই গ্রাহ্য হবে না। অজুর নিয়ম হলো দুই হাতের কনুই পর্যন্ত ধোয়া, দুই পায়ের পাতার উপরের গিট পর্যন্ত ধোয়া, নাক ও কানের ছিদ্রসমেত মুখমণ্ডল ধোয়া। অজু করার সময় একটি নিয়ত পড়তে হয়, আর পড়তে পড়তে পাকসাফ হতে হয়। অজুর সময় কোথাও যদি একচুল পরিমাণ শুকনো থাকে অর্থাৎ পানি না যায় কিংবা অজুর নিয়ত যদি সঠিকভাবে পড়া না হয়, তবে তার সেই দিনকার এবাদত কবুল হবে না।
আগেই বলা হয়েছে যে, ঈসায়ীরা পাকসাফ হওয়ার জন্য বাহ্যিক কোনকিছুর উপর নির্ভর করে না। হজরত ঈসার কথা হলো মানুষের বাইরে থেকে যা ভিতরে যায়, তা মানুষকে নাপাক করে না বরং ভিতর থেকে যা বেরিয়ে আসে তা-ই মানুষকে নাপাক করে। তিনি বুঝাতে চেয়েছেন, মানুষের অন্তর থেকে সব রকম কুচিন্তা, মন্দতা, ব্যভিচার, লোভ ইত্যাদি বেরিয়ে আসে ও মানুষকে নাপাক করে। যদি কারো অন্তর পরিষ্কার না হয়, তবে অজু করলেও মানুষ নাপাক থাকতে পারে। তিনি মানুষের অন্তর পরিষ্কার করার জন্য নিজের জীবন কোরবানি দিতে এসেছিলেন। যে ব্যক্তি হজরত ঈসা মসীহকে নাজাতদাতা ও প্রভু বলে বিশ্বাস ও গ্রহণ করেন তার সব পাপ ক্ষমা হয়, তার অন্তর পরিষ্কার হয়, তখনই তিনি এবাদত করার উপযুক্ত হন। তার আর অজুর প্রয়োজন নেই। হজরত ঈসাকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে, তিনি বলেছিলেন, যে গোসল করেছে তার হাত ধোয়ার প্রয়োজন হয় না।
অজুকে যদি পয়পরিষ্কার বলা হয়, তবে এর যথেষ্ট মূল্য আছে। কারণ সবসময় আমরা হাতে কিছু না কিছু ধরি, আর স্বাভাবিকভাবেই হাতে রোগজীবাণু লাগে। তাই হাত-পা-মুখ ধুলে পরিচ্ছন্ন থাকা যায়। বিজ্ঞানের দৃষ্টিতেও এটি স্বাস্থ্যসম্মত এবং গ্রহণযোগ্য। কিন্তু যদি এটি ধর্মীয় উপকরণ বলা হয়, তখন ঈসায়ীদের দৃষ্টিতে এর কোন মূল্য থাকে না। কারণ হজরত ঈসা তাঁর পবিত্র রক্ত দিয়ে, তাদের পাকসাফ করেছেন। অতএব, ঈসায়ীদের কাছে বাহ্যিক অজুর কোন বিশেষত্ব নেই।