সংক্ষিপ্ত উত্তর:
না, ১২০ বছর নয়, হজরত ঈসা মাত্র ৩৩ বছর দুনিয়াতে বেঁচেছিলেন।
ব্যাখ্যামূলক উত্তর:
অবধারিত সত্য – আহমদিয়া মতবাদ অনুসারে হজরত ঈসা ১২০ বছর বেঁচেছিলেন এবং ভারতে গিয়ে স্বাভাবিক মৃত্যু বরণ করেছেন। সুতরাং তাদের মতে তাঁর ৩৩ বছর বয়সের ক্রুশীয় মৃত্যু কাল্পনিক গল্পমাত্র। আহমদিয়া বা কাদিয়ানি মতবাদীদের প্রধান লক্ষ্য ক্রুশধ্বংস। কিতাবি সত্য অনুযায়ী, আসলে এটা ইব্লিশের ইচ্ছা ছিল যেন ক্রুশের সত্যকে ধবংস করা যায়। কিন্তু যে সত্যের উপর ভিত্তি করে ঈসায়ী ঈমান ও আমল প্রতিষ্ঠিত, সেই চিরস্থায়ী সত্যকে খোঁড়া যুক্তি দিয়ে বিযুক্ত করা যায় না। হজরত ঈসার দুনিয়াতে আগমনের উদ্দেশ্যই ছিল মৃত্যুবরণ। তিনি বেঁচে থাকতে সরাসরি তিনবার উদাহরণ হিসাবে, আরো চারবার নানা দৃষ্টান্তের মধ্যদিয়ে তাঁর মৃত্যুর বিষয়ে সরাসরি বলেছেন। প্রাচীনকালের নবিরা তাঁর যন্ত্রণাদায়ী মৃত্যুর বিষয়ে ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন। জন্মের ছয়মাস আগে হজরত ইয়াহিয়া এসে তাঁর মৃত্যুদায়ী কোরবানির কথা ঘোষণা করেছিলেন। অতএব, তাঁর মৃত্যু যে অবধারিত সত্য এতে কোন সংশয় থাকার অবকাশ নেই।
ঐতিহাসিক ঘটনা – রোমীয় শাসনকর্তা একজন ঐতিহাসিক ব্যক্তি যিনি হজরত ঈসার মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেছিলেন। কিতাব বলে, তিনি কোন দোষ পান নি তাই হাত ধুয়ে, ‘এই মৃত্যুর জন্য তিনি দায়ী নন’ বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। রাজা হেরোদ এবং আগ্রিপাস ছিলেন ঐতিহাসিক ব্যক্তিবর্গ। তারা একই সময়ে বাস করতেন এবং হজরত ঈসার মৃত্যুর ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত ছিলেন। হজরত ঈসা মৃত্যু থেকে জীবিত হয়ে ওঠার ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন বলে রোমীয় কর্তৃপক্ষ হজরত ঈসার কবর পাথর দিয়ে সীলমোহর করে দিয়েছিলেন। হজরত ঈসার মৃত্যুর বিষয়টি ইহুদি ও ফরিশিদের বিশ্বাসের পরিপন্থি বলে, তারা গোপনে পাহারা দিয়েছিলেন। এই মৃত্যু যদি সত্য না হতো তবে এতো ব্যবস্থার কী প্রয়োজন ছিল?
কাদিয়ানিদের দাবি অনুযায়ী, হজরত ঈসা ১২০ বছর পর মৃত্যু বরণ করলে, তাঁর পুনরুত্থানের বিষয়টি কীভাবে ব্যাখ্য করা যাবে। নবিরাসহ হজরত ঈসা কেবল তাঁর মৃত্যুর ভবিষ্যতবাণীই করেননি, পুনরুত্থানের ভবিষ্যতবাণীও করেছিলেন। এছাড়া মসলা নিয়ে কবরের কাছে মহিলাদের যাওয়া, মসীহের দেখা পাওয়া, সাহাবিদের খবর দেওয়া, পাকরুহের জন্য অপেক্ষা করার কথা বলা এবং সাহাবিদের সামনে তাঁর বেহেশতে চলে যাওয়া ইত্যাদি সব ঘটনাই হজরত ঈসার ৩৩ বছর বয়সেই সংঘটিত হয়েছে এবং অনেক সাক্ষীর সামনেই হয়েছে। হজরত ঈসা যদি সেই সময় মৃত্যু বরণ না করতেন, তবে তিনি নিশ্চয় পরবর্তিতে তাঁর মৃত্যু ও পুনরুত্থানের কথা বলতেন না। অতএব, হজরত ঈসা ১২০ বছর বেঁচে থাকবার কাহিনী একটি কাল্পনিক গল্পমাত্র যা সত্যের ধারেকাছে নেই।