সংক্ষিপ্ত উত্তর:
না, তিনি হজরত মুহম্মদ (স:) এর উম্মত হয়ে ফিরে আসবেন না বরং তিনি ফিরে আসলে পর তৎকালীন জীবিত সকলেই তাঁর উম্মত হবে।
ব্যাখ্যামূলক উত্তর:
আগের আলোচনায় আমরা পরিষ্কার দেখেছি, যে কারণে আল্লাহ মানুষের কাছে নবি-পয়গাম্বরদের পাঠিয়েছেন তার সমাধান হজরত ঈসা মসীহের মধ্য দিয়েই হয়েছে। আগের সকল নবিই হজরত ঈসার কথা নানাভাবে ভবিষ্যতবাণী করেছিলেন। এমনকি তাঁর জন্ম, কাজ, মৃত্যু, পুনরুত্থান, পুনরাগমন এবং তাঁর উভয় আগমনের উদ্দেশ্যও নবিরা তাঁদের ভবিষ্যত বাণীর মাধ্যমে প্রকাশ করেছিলেন। হজরত ঈসা কখনও কোথাও বলেন নি, তাঁর চলে যাবার পর আর একজন নবি আসবেন। ইঞ্জিল শরিফের কোথাও এমন কোন উদ্ধৃতি নেই যে মুহম্মদ নামে কোন নবি আসবেন এবং হজরত ঈসা তাঁর উম্মত হবেন। বরং হজরত ঈসার শিক্ষা ও দর্শন থেকে খুব স্পষ্ট করে বোঝা যায়, গুনাহগার মানুষের জন্য একমাত্র হজরত ঈসাকেই প্রয়োজন। কেননা তিনিই গুনাহগার মানুষের জন্য প্রাণ দিয়েছেন; তাঁর মধ্য দিয়েই ইহকাল ও পরকালের নিশ্চয়তা এসেছে।
হজরত ঈসা কেন দুনিয়াতে ফিরে আসবেন, তার কারণ তিনি নিজেই বলে গেছেন। তিনি বলেন, “আমি গিয়ে তোমাদের জন্য জায়গা ঠিক করে আবার আসব আর আমার কাছে তোমাদের নিয়ে যাব যেন আমি যেখানে থাকি তোমরাও সেখানে থাকতে পার” (ইউহোন্না ১৪:৩)। এই আয়াতের মর্মার্থ হলো, হজরত ঈসা তাঁর উম্মতদের নেবার জন্যই আবার আসবেন, মানুষকে অন্যকারো উম্মত বানাতে নয়। হজরত ঈসা নিজেকে ইবনে আদম বলেও পরিচয় দিতেন এবং উম্মতদের মেষ বা ভেড়া বলতেন। একবার তিনি বলেছেন, “ইবনে-আদম সমস্ত ফেরেশতাদের সঙ্গে নিয়ে যখন নিজের মহিমায় আসবেন, তখন তিনি বাদশাহ হিসাবে তাঁর সিংহাসনে মহিমার সঙ্গে বসবেন। সেই সময় সমস্ত জাতির লোকদের তাঁর সামনে একসঙ্গে জমায়েত করা হবে। রাখাল যেমন ভেড়া আর ছাগল আলাদা করে, তেমনি তিনি সব লোকদের দু’ভাগে আলাদা করবেন। তিনি নিজের ডানদিকে ভোড়াদের আর বাঁ দিকে ছাগলদের রাখবেন। এরপরে বাদশাহ তাঁর ডানদিকের লোকদের বলবেন, ‘তোমরা যারা আমার পিতার দোয়া পেয়েছ, এস। দুনিয়ার শুরুতে যে রাজ্য তোমাদের জন্য প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে, তার অধিকারী হও (মথি ২৫:৩১-৩৫)। এই আয়াতগুলোতেও হজরত ঈসার দ্বিতীয় আগমনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে।