সংক্ষিপ্ত উত্তর:
রাজনৈতিক আগ্রাসনের সাথে ঈসায়ীদের কোন সম্পর্ক নেই।
ব্যাখ্যামূলক উত্তর:
অনেকে মনে করেন, দেশে দেশে যে যুদ্ধ হচ্ছে, রাজনৈতিক উত্থান পতন ঘটছে, সরকার পরিবর্তন হচ্ছে, এই সব কিছুর মদদ দাতাদের প্রথম সারিতে আছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। যেহেতেু এই দুটো দেশই খ্রিস্টান দেশ, সেহেতু খ্রিস্টান কিংবা ঈসায়ীরা এসব কর্মকাণ্ডে জড়িত কিংবা এসব কার্যকলাপের প্রতি ঈসায়ীদের সমর্থন আছে। আসলে এই ধারণা কোন অর্থেই সঠিক নয়। এর কারণ হলো, রাজনীতি এবং ধর্মনীতি এক নয়। রাজনীতি বিভিন্ন কিছুর উপর নির্ভর করে, আর প্রকৃত ধর্মনীতি নির্ভর করে আল্লাহর উপর। উল্লিখিত দেশগুলোর মধ্যে যারা রাজনীতি করছে কিংবা ক্ষমতায় আছে, তাদের মধ্যে সাধারণ ধর্মকর্ম করলেও অনেকেই সত্যিকার ঈমানদার নয়। অন্য যেকোন সাধারণ লোকের মতো হয়তো তারা তাদের ধর্মীয় কিতাব পাঠ করে, এবাদতে যোগ দেয়, দান খয়রাত করে আবার সেই একই সাধারণ লোকের মতো কিছু অন্যায়ও করে; এমনকি অনেকের প্রকৃত ঈমানও নেই। এইসব লোকদের সাথে প্রকৃত ঈসায়ী ঈমানের কোন বাস্তব সম্পর্ক নেই। তাদের দিয়ে সকল ঈসায়ী ঈমানদারের বিচার করাও যুক্তিসঙ্গত নয়।
উদাহরণস্বরূপ, বুশের ইরাক আক্রমণের সময়, অনেক ঈসায়ী বুশের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। রাস্তায় নেমে তার বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়। ইউরোপ, আমেরিকাতে তার ও তার সরকারের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করে। ঈসায়ী নেতৃবৃন্দ বুশকে একাজ থেকে সরে আসার আমন্ত্রণ জানায়। এমন কি আমেররিকসহ পুরো খ্রিস্টান দেশগুলোতেই বুশের জনসমর্থন নিম্নগতির দিকে যায়। ঈসায়ীরা যেকোন কর্তপক্ষের জন্য দোয়া মুনাজাত করে। কারণ তাদের বিশ্বাস, আল্লাহ নিজেই কর্তৃপক্ষকে মনোনীত করেন। তাই বলে কর্তৃপক্ষের আল্লাহর ইচ্ছাবিরুধী অপকর্মকেও সমর্থন করবে এমন নয়। আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন সত্য, তাই বলে তার পাপ কাজকে সমর্থন করতে পারেন না। যুগে যুগে ঈসায়ী ঈমানদাররা সত্যের জন্য অনেক রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এমন কি নামধারী অনেক ঈসায়ী রাজাও অত্যাচারী রাজা ছিল, যারা ঈমানদারদের উপরও অত্যাচার করতো। সুতরাং খ্রিস্টান বা ঈসায়ী হলেই যে ঈসায়ীরা তাদের সমর্থন করবে কিংবা তাদের খারাপ কাজের স্বীকৃতি দেবে, এমন নয়।