সংক্ষিপ্ত উত্তর:
নাজেল হওয়ার দিক থেকে ইসলামি শিক্ষা অনুযায়ী বলা হয়, কোরান সরাসরি আল্লাহর কথা, এখানে মানুষের কোন হাত নেই। আর ইঞ্জিল শরিফের দিক থেকে বলা যায়, ইঞ্জিল শরিফ আল্লাহর সরাসরি কথা নয়, আল্লাহ কিছু মানুষকে পাকরুহের দ্বারা অনুপ্রণিত করেছেন। আর সেই অনুপ্রেরণা পেয়ে, লেখকগণ আল্লাহর কথা নিজেদের ভাষায় লিখেছেন।
ব্যাখ্যামূলক উত্তর:
কোরানকে বলা হয় আল্লাহর সরাসরি কালাম। এর ভাষা, প্রত্যেকটি দাড়ি, কমা, জের, জবর সবই আল্লাহর কাছ থেকে এসেছে। কোরান হজরত মুহম্মদের উপর তাঁর ৪০ বছর বয়সে নাজেল হয় প্রথমে হেরা পর্বতের গুহায় এবং পরবর্তিতে বিভিন্ন স্থানে। জিবরাইল ফেরেশতা এসে হজরত মুহম্মদকে বলতেন আর তিনি তা মনে রেখে অন্যদের বলতেন। আর তারা তা শুনেশুনে মুখস্থ রাখতেন এবং পরবর্তিতে তা লিখতেন। ইসলামের প্রথম খলিফা হজরত আবু বকরের সময়, কোরানের বিভিন্ন লিপি সংরক্ষণের তেমন জোড়ালো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। অতপর দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমরও এ বিষয়ে তেমন কাজ করেননি। কিন্তু তৃতীয় খলিফা হজরত ওসমানের সময়েই কোরানের লেখা সংগ্রহ ও সন্নিবদ্ধ করা হয়। কোরান নাজেল হয় শুধু একজনের কাছে, আর তিনি হলেন হজরত মুহম্মদ। তিনি তাঁর বিশেষ সাহাবিগণকে বলেছেন আর তারা মনে রেখেছেন ও সময় ও সুযোগ পেয়ে তা লিপিবদ্ধ করেছেন। ধারণা ও বিশ্বাস করা হয় যে, কোরানের কথা যেভাবে আছে, আল্লাহ ঠিক সেভাবে বলেছেন।
ইঞ্জিল শরিফের বেলায় ব্যাপারটি ভিন্ন রকমের। বিশ্বাস করা হয় যে, আল্লাহ বেশকিছু লোককে বাছাই করেছেন ই্িঞ্জল শরিফ লেখার জন্য। এই লেখকরা পাকরুহের অনুপ্রেরণায় নিজেদের দক্ষতা, কৃষ্টি, সংস্কৃতি, আচার-ব্যবহার, রীতি-নীতি ইত্যাদি ব্যবহার করে, নিজেদের ভাষায় তা লিখেছেন। অর্থাৎ আল্লাহ এই লেখকদের পরিপূর্ণভাবে ব্যবহার করেছেন। ইঞ্জিল শরিফের লেখকদের মধ্যে আছেন মাছ ধরার জেলে ও ক্রীতদাস থেকে শুরু করে সুশিক্ষিত পন্ডিত ব্যক্তিবর্গ। এই লেখকদের মধ্যে রয়েছেন হজরত ঈসার ঘনিষ্ঠ সাহবিদের মধ্যে কয়েকজন এবং তাঁর আপন ভাই, যিনি প্রথম জামাত বা সমাজের প্রথম ইমাম ছিলেন। এই লেখকেরা খুব কাছে থেকে তাঁকে দেখেছেন ও তাঁর সাথে থেকেছেন এবং আল্লাহর পাকরুহের পরিচালনায় লিখেছেন।