সংক্ষিপ্ত উত্তর:
তিনি নিজের জীবন দিয়ে শিক্ষাকে বাস্তবধর্মী করে তুলেছেন বলেই তাকে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক বলা হয়।
ব্যাখ্যামূলক উত্তর:
শিক্ষার দিক বিবেচনা করলে দেখা যায়, অন্যান্য সকল নবিগণ হজরত মুসার তাওরাত শরিফের শিক্ষাকে ব্যাখ্যা করেই তাদের ধর্মীয় চিন্তাধারাগুলোকে বিকশিত করেছেন এবং নতুন নতুন ধর্মীয় মতবাদ দিয়েছেন। কিন্তু হজরত ঈসাই একমাত্র নবি যিনি হজরত মুসার বলয় থেকে বেরিয়ে এসে নতুন ও কালজয়ী শিক্ষা দিয়েছেন। তাওরাতে উল্লিখিত খুনের সম্পর্কে তিনি বলেন, “তোমরা শুনেছ, আগেকার লোকদের কাছে এই কথা বলা হয়েছে, ‘খুন করো না; যে খুন করে সে বিচারের দায়ে পড়বে।’ কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, যে কেউ তার ভাইয়ের উপর রাগ করে সে বিচারের দায়ে পড়বে।” জেনার বিষয়ে তিনি বলেন, “তোমরা শুনেছ, এই কথা বলা হয়েছে, ‘জেনা করো না।’ কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, যে কেউ কোন স্ত্রী লোকের দিকে কামনার চোখে তাকায় সে তখনই মনে মনে তার সঙ্গে জেনা করল।” কসমের বিষয়ে শিক্ষা দেন, “আবার তোমরা শুনেছ, আগেকার লোকদের কাছে বলা হয়েছে, ‘মিথ্যা কসম খেয়ো না, বরং মাবুদের উদ্দেশে তোমারে সমস্ত কসম পালন কোরো।’ কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, একেবারেই কসম খেয়ো না।” প্রতিশোধ নেওয়ার বিষয়ে শিক্ষা দেন, “তোমরা শুনেছ, বলা হয়েছে, ‘চোখের বদলে চোখ এবং দাঁতের বদলে দাঁত।’ কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, তোমাদের সঙ্গে যে কেউ খারাপ ব্যবহার করে তার বিরুদ্ধে কিছুই করো না; বরং যে কেউ তোমার ডান গালে চড় মারে তাকে অন্য গালেও চড় মারতে দিয়ো।” শত্রু সম্পর্কে তিনি শিক্ষা দিয়েছেন, “তোমরা শুনেছ, বলা হয়েছে, ‘তোমার প্রতিবেশীকে মহব্বত করো এবং শত্রুকে ঘৃণা করো।’ কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, তোমাদের শত্রুদেরও মহব্বত করো। যারা তোমাদের জুলুম করে তাদের জন্য মুনাজাত করো” (ইঞ্জিল শরিফ ১ম সিপারা মথি ৫ অধ্যায়)। উপরিউক্ত শিক্ষাগুলো থেকে সহজেই বিবেচনা করা যায় যে, হজরত ঈসা মসীহ শরিয়তের গভীর বিষয়গুলোই শিক্ষা দিয়েছিলেন এবং বাহ্যিক নিয়মকানুনের চেয়ে দরকারি বিষয় যে আল্লাহর ইচ্ছা, তা-ই তুলে ধরেছিলেন। এক কথায় তিনি শরিয়তের বলয় থেকে বের হয়ে এসে, শরিয়তের আসল উদ্দেশ্যকেই বাস্তবায়ন করেছেন।