সংক্ষিপ্ত উত্তর:
কারণ ঈসা মসীহই একমাত্র উদ্ধারকর্তা। তিনি এই কাজের উপযুক্ত অর্থাৎ নিষ্পাপ। এই কাজের জন্যই আল্লাহ তাঁকে দুনিয়াতে পাঠিয়েছিলেন।
ব্যাখ্যামূলক উত্তর:
ইঞ্জিল শরিফে আছে, “নাজাত আর কারও কাছে পাওয়া যায় না, কারণ সারা দুনিয়াতে আর এমন কেউ নেই যার নামে আমরা নাজাত পেতে পারি” (ইঞ্জিল শরিফ, প্রেরিত ৪:১২)। কেউ হয়তো বলতে পারে, ইঞ্জিল শরিফ তো বলবেই, আমরা তা-ই বা কেন বিশ্বাস করতে যাব? বিষয়টি যৌক্তিক দিক থেকেও বিবেচনা করা যায়। নবি-পয়গাম্বরদের নাম অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আল্লাহর দেওয়া নবির নাম তাঁর আগমনের উদ্দেশ্য এবং জীবনের কর্মকাণ্ডকে ব্যক্ত করে। হজরত আদমের নাম আল্লাহই রেখেছিলেন। আদম মানে মাটি, আর মাটির আদম মৃন্ময় কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে মাটিতেই সমাহিত হয়েছিলেন। হজরত ইব্রাহিমের নাম আল্লাহ নিজেই ইব্রাম থেকে ইব্রাহিম রেখেছিলেন, যার মানে অনেক জাতির পিতা। আর তিনি ইহুদি, ঈসায়ী, মুসলমান জাতির আদি পিতা হিসাবে পরিচিত হয়ে আছেন। হজরত ঈসার জন্মের আগেই জিবরাইল ফেরেশতা এসে এই ‘ঈসা’ নাম দিয়েছিলেন, যার মানে নাজাতদাতা।
নাজাত মানে উদ্ধার। আর এই উদ্ধার হলো গুনাহ থেকে উদ্ধার। হজরত ঈসা গুনাহগার মানুষকে উদ্ধার করতেই এই দুনিয়াতে এসেছিলেন। হজরত মুসা হজরত ঈসার জন্মের প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছর আগে বলেছিলেন, ‘তোমাদের মাবুদ আল্লাহ তোমাদের ভাইদের মধ্য থেকেই তোমাদের জন্য আমার মতো একজন নবি দাঁড় করাবেন।’ আমরা জানি হজরত মুসা ফেরাউনের দাসত্ব থেকে বনিইসরাইল জাতিকে উদ্ধার করেছিলেন। আর হজরত ঈসা মানুষকে গুনাহ ও শয়তানের দাসত্ব থেকে উদ্ধার করতে এসেছিলেন। ইঞ্জিল মানে সুসংবাদ। আর এই সুসংবাদই হলো আল্লাহর শক্তি, যা হজরত ঈসার কোরবানি, কাফ্ফারা, মৃত্যু এবং পুনরুত্থান, যার দ্বারা তিনি ঈমানদারদের নাজাত দান করেন।
অন্ধ অন্ধকে পথ দেখাতে পারে না। এক গুনাহগার আর এক গুনাহগারকে উদ্ধার করা সম্ভব নয়। হজরত আদমের রক্তে জন্ম গ্রহণ করে সবাই গুনাহগারের কাতারে এসে পড়েছে। সেই ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম একমাত্র হজরত ঈসা। তিনি জন্ম থেকে নিষ্পাপ ছিলেন এবং প্রাত্যহিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়েও নিষ্পাপ জীবন যাপন করেছেন। শুধু তা নয়, তিনিই স্বেচ্ছায় সকলের হয়ে কাফ্ফারা দিয়েছেন। অতএব, তাঁকে ছাড়া নাজাত সম্ভব নয়।