সংক্ষিপ্ত উত্তর:
ইঞ্জিল শরিফ হজরত ঈসার সাহাবিরা লিখলেও তা আল্লাহর কালাম হিসাবে স্বীকৃত।
ব্যাখ্যামূলক উত্তর:
বলা হয়ে থাকে যে, ঈসা মসীহের সাহাবিরাই অর্থাৎ সাধারণ মানুষেরাই ইঞ্জিল শরিফের লেখক। সুতরাং আমাদের সেই লেখা পড়ার ও মানার কোন যৌক্তিকতা নেই। ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, আল্লাহ সাধারণত খুব সাধারণ মানুষকেই তাঁর কাজে ব্যবহার করেছেন। আল্লাহ হজরত ঈসার আগেকার যে নবিদের মনোনীত করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে হজরত মুসা এবং হজরত দাউদ উল্লেখযোগ্য। দেখা যায়, এই দু’জনই একসময় ভেড়ার রাখাল ছিলেন। আল্লাহ সবসময় সাধারণ লোকদের দিয়ে অসাধারণ কাজ করেছেন। হজরত ঈসার সাহাবিরা সাধারণ লোক ছিলেন সত্য; কিন্তু তাদের মধ্যে কয়েকজন নবি, কয়েকজন শিক্ষক, কয়েকজন প্রচারক ইত্যাদি ছিলেন। তাঁরা একসময় অসাধ্য সাধন করেছিলেন। তাঁরা হজরত ঈসার মতো রোগীদের সুস্থ করেছিলেন, মৃতকে জীবন দিয়েছিলেন, প্রাকৃতিক শক্তির উপর বিজয়ী হয়েছিলেন। অর্থাৎ সাধারণ লোক হলেও আল্লাহ তাঁদের অসাধারণ ক্ষমতা দিয়েছিলেন। আল্লাহ তাদের মধ্যে কয়েকজনকে নবি হিসাবে কিতাব লেখার জন্য নিযুক্ত করেছিলেন। সেজন্য ইঞ্জিল শরিফের লেখকদের একজন বলেছেন, “…এই কথা মনে রেখ যে, কিতাবের মধ্যেকার কোন কথা নবিদের মনগড়া নয়, কারণ নবিরা তাদের ইচ্ছামতো কোন কথা বলেন নি; পাকরুহের দ্বারা পরিচালিত হয়েই তাঁরা আল্লাহর দেওয়া কথা বলেছেন” (২ পিতর ১:২০, ২১ আয়াত)।
এছাড়া যেসব কিতাব পাককিতাবের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, তা অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা করেই গ্রহণ করা হয়েছে। এই লেখাগুলোর মধ্যে যদি আগের কিতাবের বিষয়বস্তুর সাথে ধারবাহিকতা না থাকতো, তবে যে মহান সাধকেরা এগুলো একসাথে যুক্ত করেছেন তথা আল্লাহর কালাম হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছেন, তা দিতেন না। পাককিতাবের একজন লেখক বলেছেন, “পাককিতাবের প্রত্যেকটি কথা আল্লাহর কাছ থেকে এসেছে এবং তা শিক্ষা, চেতনা দান, সংশোধান এবং সৎ জীবনে গড়ে উঠবার জন্য দরকারি” (২ তীমথিয় ৩:১৬ আয়াত)। অর্থাৎ আল্লাহর কালামের প্রত্যেকটি কথা আমাদের পড়া উচিত যেন আমরা সংশোধিত হই এবং সৎ জীবনে গড়ে উঠি। কোরান শরিফে বলা হয়েছে, “হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহ, তাঁর রসুলে, তিনি যে কিতাব তাঁর রসুলের প্রতি অবর্তীর্ণ করেছেন তাতে এবং যে কিতাব তিনি পূর্বে অবতীর্ণ করেছেন তাতে ঈমান আন” (সূরা নিসা ১৩৬)। পূর্বে যেসব কিতাব নাজেল হয়েছে, ইঞ্জিল শরিফ যা পাকরুহের পরিচালনায় হজরত ঈসার সাহবীগণ কর্তৃক লিখিত হয়েছে, তা অন্যতম। তাতে ঈমান আনার জন্য কোরানও নির্দেশ দিয়েছে।