সংক্ষিপ্ত উত্তর:
ঈসায়ী এবং ইহুদির পার্থক্য হলো ঈমান এবং শরিয়তের।
ব্যাখ্যামূলক উত্তর:
পৃথিবীর ধর্মগুলোকে তিনটি প্রধান ভাগে ভাগ করা যায়। একেশ্বরবাদী ধর্ম, বহুত্ববাদী ধর্ম এবং মানবতাবাদী ধর্ম। একেশ্বরবাদী ধর্মগুলোর মধ্যে ইহুদি, ঈসায়ী এবং মুসলমানরা পড়ে। অনেকে ঈসায়ী এবং ইহুদি ধর্মকে এক বলে মনে করে। কিন্তু এ দুটি আসলে কোন ক্রমেই এক নয় বরং এদের পার্থক্য দিন রাতের পার্থক্যের মতো। এই দুই ধর্মে দুইএকটি ক্ষেত্রে মিল থাকলেও অমিল অনেক বেশি। হজরত ঈসা নিজে ইহুদি বংশে জন্মগ্রহণ করলেও এবং অনেক ইহুদি তাঁর উপর ঈমান আনলেও ইহুদি নেতারাই শেষে রোমীয়দের সাথে ষড়যন্ত্র করে, হজরত ঈসা মসীহকে ক্রুশে দিয়েছিলেন। ইহুদিদের ধর্মীয় কিতাব অনুসারে হজরত ঈসাই ছিলেন তাদের মসীহ কিন্তু মর্ধান্ধতা, কুসংস্কার এবং রুহানিকতার অভাবে তারা তাঁকে চিনতে পারেনি।
নিচে ঈসায়ীদের সাথে ইহুদিদের পার্থক্যগুলো দেখানো হলো:
ক্রমিক বিষয় ঈসায়ী ইহুদি
সৃষ্টিকর্তা | এক আল্লাহ বিশ্বাস করে | এক আল্লাহ বিশ্বাস করে |
নেতা | হজরত ঈসা | হজরত মুসা |
ধর্মের নাম | ঈসায়ী / খ্রিস্টধর্ম | ইহুদি |
ধর্মীয় কিতাব | পুরো কিতাবুল মোকাদ্দস | তৌরাতসহ প্রথম ৩৯ খণ্ড |
পোশাক | বাধা-ধরা নিয়ম নেই | বিশেষ পোশাক আছে |
খাবার | খাবারটা বড় বিষয় নয় | খাবারে বিধি নিষেধ আছে |
এবাদতখানা | স্থান-কাল-পাত্রভেদে যেকোন | নাম "সিনাগগ" |
এবাদতের দিক | কোন নির্দিষ্ট দিকে মুখ করতে হয় না | নির্দিষ্ট দিকে মুখ করতে হয় |
উপায় | গান, কিতাব পাঠ/ব্যাখ্যা ও মুনাজাত | গান, কিতাব পাঠ, ব্যাখ্যা ও মুনাজাত |
ধর্মকর্ম | কিতাব অনুসারে জীবন যাপন | বাহ্যিক নিয়মকানুন পালন করতে হয় |
নবিদের বিষয়ে | নবিদের বিশ্বাস করে | প্রায় সব নবিই ইহুদি ধর্মের |
স্থানীয় নেতা | ইমাম / পালক / পরিচালক | পুরোহিত / রাব্বি |
উল্লেখ্য যে, ইসরাইলিদের বর্তমান পরিস্থিতিতে আমেরিকা এবং কিছু ইউরোপীয় দেশের বাস্তব সাহায্যের কারণে অনেকে ধারণা করতে পারে যে, ঈসায়ী এবং ইহুদিরা এক। কিন্তু মনে রাখা প্রয়োজন, বর্তমানকার এই পরিস্থিতি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং মাঝে মাঝে ব্যক্তিগত। এর সাথে ঈসায়ীদের কোন সম্পর্ক নেই। বরং কিতাবুল মোকাদ্দস অনুসারে স্বৈরাচারী, স্বেচ্ছাচারী, অত্যাচারী কোন দলকে কোনভাবে সাহায্য সহযোগিতা দেওয়া সম্পূর্ণ অন্যায় ও গর্হিত কাজ; কোন কিতাবি লোক এই কাজ করতে পারে না।