সংক্ষিপ্ত উত্তর:
না, ঈসায়ীরা তিন আল্লাহর নয় বরং এক আল্লাহরই এবাদত করে।
ব্যাখ্যামূলক উত্তর:
ঈসায়ীরা কখনও কোনভাবে তিন আল্লাহ বিশ্বাস করে না, করতে পারে না; আর তাই তিন আল্লাহর এবাদত করার প্রশ্নই ওঠে না। যদি কোন ঈসায়ী তিন আল্লাহ বিশ্বাস করে তবে সে ঈসায়ী নয় বরং আল্লাহ ও কিতাবের বিরুদ্ধে তার অবস্থান। এখন আসুন, আল্লাহ সম্পর্কে ঈসায়ীরা কী বিশ্বাস করে তা দেখি:
আল্লাহ এক: তৌরাত শরিফে আছে, “বনি-ইসরাইলরা শোন, আমাদের মাবুদ আল্লাহ এক” (দ্বিতীয় বিবরণ ৬:৮)। হজরত ঈসা মসীহও একই শিক্ষা দিয়েছিলেন যে, আমাদের আল্লাহ একই আল্লাহ, যার এবাদত হজরত আদম, নুহ, ইব্রাহিম, ইসহাক, ইয়াকুব, দাউদ এবং অন্যান্য নবিরা করেছিলেন।
লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ: আল্লাহ ছাড়া যে আর কোন মাবুদ নাই, তার শিক্ষাও কিতাবুল মোকাদ্দস থেকে এসেছে। আল্লাহভক্ত লোকদের জীবন ইতিহাস থেকে বার বার প্রমাণিত হয়েছে যে, একমাত্র ও অদ্বিতীয় আল্লাহ নিজেই মানুষের উপাস্য। তিনি নিজেই ঘোষণা করেছেন, “আমার জায়গায় কোন দেবতাকে দাঁড় করাবে না” (হিজরত ২০:২)। তৌরাত শরিফে বর্ণিত ১০ হুকুমের দ্বিতীয়টি হলো, পূজার উদ্দেশ্যে তোমরা কোন মূর্তি তৈরি করবে না, তা আকাশের কোন কিছুর মতো হোক বা মাটির উপরকার কোন কিছুর মত হোক কিংবা পানির মধ্যেকার কোনকিছুর মতো হোক” (হিজরত ২০: ৪)। কিতাবুল মোকাদ্দসের প্রধান শিক্ষা হলো কেবল আল্লাহর এবাদত করতে হবে যা ঈসায়ীরা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে। আল্লাহপাক বলেন, “তোমরা কোন দেবদেবীর পূজা করবে না কিংবা তাদের কাছে মাথা নিচু করবে না এবং তাদের সেবা করবে না কিংবা তাদের উদ্দেশ্যে বলি দেবে না। কিন্তু মাবুদেরই এবাদত করবে, তাঁকে সেজদা করবে এবং তাঁর উদ্দেশ্যেই কোরবানি দেবে” (২ বাদশাহনামা ১৭:৩৫-৩৬)।
ন্যায়বিচারক: ঈসায়ীরা আল্লাহকে ন্যায়ের ধারক ও বাহক হিসেবে বিশ্বাস করে। বিশ্বাস করে যে, তিনি কখনও অন্যায় করেন না, অন্যায়কারীকে প্রশ্রয় দেন না কিংবা অন্যায়কারীর পক্ষ নেন না। আল্লাহ পবিত্র, তাই তিনি প্রত্যেক গুনাহ্র বিচার করবেন। কোন গুনাহগার মানুষ তাঁর সাথে থাকতে পারে না কিংবা বেহেস্তে যেতে পারবে না। সত্য ও ন্যায়পরায়ণতা আল্লাহ্র অনন্য গুণ যা তাঁর মহব্বত গুণের সাথে পরিপূর্ণ সামঞ্জস্য রেখে চলে।
মহব্বতের আল্লাহ: ঈসায়ীদের বিশ্বাস হলো আল্লাহ হলেন মহব্বতের আধার। আল্লাহভক্ত ইউহোন্না বলেন, “আল্লাহ নিজেই মহব্বত” (১ ইউহোন্না ৪:৮)। আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করেছেন তা যেমন সত্য, তার চেয়েও বড় সত্য হলো তিনি মানুষকে ভালোবাসেন। যার ফলে আমরা তাঁকে ভুলে গেলেও তিনি বিভিন্ন উপায়ে আমাদের তাঁর কাছে আসতে সাহায্য করেন। হজরত দাউদ গজল গেয়েছিলেন, “মাবুদকে শুকরিয়া জানাও, কারণ তিনি মেহেরবান, তাঁর অটল মহব্বত চিরকাল স্থায়ী। বনি-ইসারাইলরা বলুক, তাঁর মহব্বত চিরকাল স্থায়ী। হারুনের বংশ বলুক, তাঁর মহব্বত চিরকাল স্থায়ী। মাবুদের ভক্তরা বলুক, তাঁর মহব্বত চিরকাল স্থায়ী” (জবুর শরিফ ১১৮:১-৪)।