সংক্ষিপ্ত উত্তর:
প্রকৃত অর্থে ঈসায়ীরা এবাদতের সময় মদ খায় না।
ব্যাখ্যামূলক উত্তর:
ঈসায়ীরা এবাদতের সময় মদ খায় না। কারণ মদেমত্ত মানুষ আল্লাহর এবাদত করতে পারে না। মদাসক্ত লোক বা মাতাল কখন কী বলে বা করে তা সে নিজেই জানে না। অতএব, কোন মাতালের পক্ষে এবাদত করা সম্ভব নয়। প্রকৃত ঈসায়ীর কাছে আল্লাহর এবাদত একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে। ঈসায়ী জীবন মানেই এবাদতপূর্ণ জীবন। এবাদতের মধ্যদিয়েই একজন ঈসা আল্লাহর সাথে কথা বলেন এবং আল্লাহ যা বলেন তা শোনেন। ঈসায়ী এবাদতের বৈশিষ্ট্য হলো রুহানি গান, প্রশংসা, কিতাব পাঠ ও মুনাজাত ইত্যাদির মাধ্যমে আল্লাহর এবাদত করা। গান, প্রশংসা ও মুনাজাতের মধ্যদিয়ে আল্লাহর সাথে কথা বলা হয়। আর কিতাব পাঠের মধ্য দিয়ে আল্লাহ কী বলছেন তা শোনা হয়। এবাদতের উপায় একএক দেশে সেই দেশের ভাষা-কৃষ্টি-সংস্কৃতির উপর নির্ভর করে। প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিজনিজ ভাষায় এবং নিজ নিজ উপায়ে এবাদত করতে পারে।
মদ খাওয়ার প্রশ্নটি কেন আসে? একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের কারণেই হয়তো এই প্রশ্নটি এসেছে। অনুষ্ঠানটির নাম প্রভুর ভোজ বা মেজবানি। প্রভুর ভোজ হলো হজরত ঈসার স্থাপিত দুটি অনুষ্ঠানের মধ্যে একটি। এই অনুষ্ঠানটি মূলত হজরত ঈসার নির্দেশে, তাঁর মৃত্যুর ঘটনাকে স্মরণ করার জন্য পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রয়োজন হয় রুটি এবং রস। রুটির বেলায় যে কোন সাধারণ রুটি বা চাপাতি কিংবা বিশেষভাবে তৈরি রুটি ব্যবহার করা হয়। আর রসের বেলায় যেকোন স্কোয়াশ বা শরবত ব্যবহার করা হয়। রুটি ব্যবহার করা হয় হজরত ঈসার দেহের প্রতীক হিসাবে। তিনি মানব জাতির মুক্তির জন্য তাঁর দেহকে কোরবানি করেছিলেন। আর স্কোয়াশ বা শরবতকেও রক্তের প্রতীক হিসেবে একই উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়। কারণ তিনি তাঁর রক্তের মূল্য দিয়ে আমাদের কিনে নিয়েছেন। এখন সেই স্কোয়াশ বা রস খাওয়ার সময় যদি কেউ দেখে, তখন সে ভাবতে পারে যে, ঈসায়ীরা এবাদতে বসে মদ খাচ্ছে। আসলে তা মদ নয়, এ হলো সাধারণ পানীয় বা স্কোয়াশ। কোন কোন শীতপ্রধান দেশে এই রসের পরিবর্তে আঙুর রসও ব্যবহার করতে পারে। তবে তা অবশ্যই মাতাল হবার জন্য নয়, অনুষ্ঠান পালনের জন্য।