সংক্ষিপ্ত উত্তর:
হ্যাঁ, ঈসায়ীরা এক আল্লাহ বিশ্বাস করে এবং তাঁর এবাদত করে।
ব্যাখ্যামূলক উত্তর:
ঈসায়ী বলতে এ দেশের অনেকেই মনে করে, তারা বিদেশি তথা ইউরোপ আমেরিকার লোক। মানুষ মনে করে, এসব বিদেশি লোকেরা সাধারণত আল্লাহ-খোদা মানে না। তারা জ্ঞান বিজ্ঞানে বিশ্বাসী; আল্লাহর অস্তিত্বকে তারা স্বীকার করে না। আসলে তা ঠিক নয়। ঈসায়ীরা যে কোন দেশের হতে পারে এবং তারা আল্লাহর অস্তিত্বকে স্বীকার করে। ঈসায়ীদের কিতাব কিতাবুল মোকাদ্দসের প্রথম খণ্ডের প্রথম আয়াতের শুরুই হলো আল্লাহকে দিয়ে। লেখা আছে, “সৃষ্টির শুরুতেই আল্লাহ আসমান ও জমিন সৃষ্টি করলেন” (পয়দায়েশ ১:১)। এরপর এই কিতাব পড়ে পড়ে আরো অগ্রসর হলে দেখা যায়, এই পৃথিবীর সবকিছুই আল্লাহ পর্যায়ক্রমে সৃষ্টি করেছেন। সবার সৃষ্টিকর্তা হিসেবে তিনি মানুষের বাধ্যতা এবং এবাদত চান। তার প্রমাণ পাওয়া যায়- তিনি আদন বাগানে হজরত আদম ও হাওয়ার কাছ থেকে বাধ্যতা কামনা করেন এবং তাঁদের ছেলে হাবিলের কোরবানি গ্রহণের মাধ্যমেও আমরা বুঝতে পারি যে, তিনি মানুষের এবাদত আশা করেন। আল্লাহ চান যেন মানুষ নৈতিক নিয়ম শৃঙ্খলা মানে, সৎ ও ন্যায়পারায়ন হয়। যার ফলে, হজরত নুহ (আ.) এর সময়কার বন্যার কথা এবং হজরত মুসা (আ.) এর দেওয়া বিখ্যাত ১০ হুকুম আমাদের তা-ই মনে করিয়ে দেয়। এছাড়া হজরত ইব্রাহিম, ইয়াকুব, দাউদ প্রমুখ নবিদের মাধ্যমেও আল্লাহ তাঁর অস্তিত্বকে তুলে ধরেছেন। আর তা কিতাবুল মোকাদ্দসে বর্ণিত আছে এবং ঈসায়ীরা তা বিশ্বাস করে।
একথা সত্য যে ইউরোপ, আমেরিকার লোকদের মধ্যে অনেক নাস্তিকও রয়েছে, যারা আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাস করে না। তাদের মধ্যে কেউ কেউ জ্ঞানবাদী, কেউ কেউ বস্তুবাদী আবার কেউ কেউ কোন বাদীই নয়। তবে এদের সংখ্যা খুব একটা বেশি নয়। আবার যারা একেশ্বরবাদী, তাদের মধ্যে সবাই যে সম্পূর্ণ কিতাবি সত্য অনুসারে চলে, তা-ও নয়। অনেকের মা-বাবা ঈসায়ী ঈমানের পথে চলতো; আর সেই কারণে কিছু পারিবারিক ও সামাজিক নিয়ম-কানুন মানে, সেই হিসাবেও কেউ কেউ ঈসায়ী পরিচয় দেয় এবং এক আল্লাহতে বিশ্বাসী বলে দাবি করে। সার্বিক অর্থে বলা যায় ঈসায়ীরা মূলত: একেশ্বরবাদী।