সংক্ষিপ্ত উত্তর:
আপাত দৃষ্টিতে ঈসায়ীদের খাবারদাবারের কোন নিয়ম নেই।
ব্যাখ্যামূলক উত্তর:
পৃথিবীর সব মানুষ সবকিছু খায় না। আবার এমন কোন জিনিষ নেই যা কোন না কোন মানুষ খায় না। কোন কোন মানুষের কাছে যা অখাদ্য অন্যকোন মানুষের কাছে সুখাদ্য। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, স্থান, কাল ও পাত্রভেদে মানুষের খাবার এবং রুচি বিচিত্র রকমের। খাদ্য-অখাদ্য বিষয়টি খাদ্যের পাক-নাপাক ধারণা থেকে এসেছে। কোন কোন লোক মনে করে, কোন কোন খাবার জায়েজ আবার অপর কোন কোন খাবার না-জায়েজ। হজরত ঈসা বলেন, মানুষের বাহির থেকে যা ভেতরে যায়, তা মানুষকে নাপাক করে না বরং ভেতর থেকে যা বেরিয়ে আসে, যেমন কুচিন্তা, রাগ, ঘৃণা, হিংসা, ব্যভিচার, লোভ ইত্যাদিই মানুষকে নাপাক করে। খাবার বাইরে থেকে ভেতরে যায় আবার বাইরে বেরিয়ে যায়, তা মানুষের শরীরকে স্পর্শ করে গেলেও অন্তরকে স্পর্শ করতে পারে না। আর যা মানুষের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে, তা মানুষের অন্তরকে নাপাক করে এবং তা মানুষের জন্য ক্ষতিকর।
একথাও ঠিক যে, একসময় আল্লাহ কোন কোন পশু-পাখি মানুষের জন্য হারাম ঘোষণা করেছিলেন। যেমন থাবা দিয়ে ধরে এমন হিংস্র জীবজন্তু, কীটপতঙ্গ, জাবর না কাটা জীবজন্তু, এক ক্ষুরওয়ালা জীবজন্তু, মাংসাসি জীবজন্তু ইত্যাদি মানুষের জন্য হারাম করে দিয়েছিলেন। কিন্তু হজরত ঈসার সময়কাল থেকে সেই সব নিষেধাজ্ঞা আর বলবৎ নেই। তার কারণ হলো, একসময় অর্থাৎ হজরত আদমের গুনাহ করার আগে হারাম বলতে কোন কিছুই ছিল না। মানুষের জন্যই আল্লাহ সবকিছু তৈরি করেছিলেন আর মানুষ তার সবই ইচ্ছানুযায়ী ভোগ করতে পারতো। কিন্তু দুনিয়াতে গুনাহর ফলে পশুর মধ্যে হিংস্রতা আসল, আসল নানা রকম ভেদাভেদ। হজরত ঈসার দুনিয়াতে আগমন এবং কাফফারা দানের মধ্যদিয়ে সেই বিধিনিষেধ উঠে গেছে। আসলে মানুষের গুনাহ খাবারদাবারের মধ্যদিয়ে হয় না, হয় তার কর্মের মধ্যদিয়ে। এই কারণে শুধু খাবার নয়, ঘুষের অর্থ দিয়ে কেনা যে কোন ভালো খাবারই হারাম হয়ে যেতে পারে। আবার মানুষের জীবন রক্ষার তাগিদে ঘোষিত হারাম জিনিষও হালাল হয়ে যেতে পারে। যেমন অনেক ঔষধের মধ্যে তথাকথিত হারাম জিনিষ রয়েছে অথচ মানুষ প্রয়োজন অনুযায়ী বাঁচার জন্য তা খায়।
কোন খাবারের জন্য যদি অন্যকোন লোক বিঘœ পায়, তবে তার পক্ষে সেই খাবার খাওয়া নিষেধ রয়েছে। আবার কোথাও কেউ কোন খাবার দিলে, তাকে মনোকষ্ট না দেবার জন্য সেই খাবার কী রকমের তা জিজ্ঞাসা না করেই খাবার নির্দেশনাও কিতাবে পাওয়া যায়। অতএব, ঈসায়ীদের জন্য খাবারের কোন বাধ্যবাধকতা নেই।