সংক্ষিপ্ত উত্তর:
আল্লাহর পাকরুহের দ্বারা পরিচালিত হয়ে, হজরত ঈসার সাহাবিরা ইঞ্জিল শরিফের বাণীগুলো লিখেছেন।
ব্যাখ্যামূলক উত্তর:
আরবি উঞ্জালা শব্দ থেকে বাংলায় নাজেল শব্দের উৎপত্তি। উঞ্জালা মানে অনুপ্রেরণা সুতরাং নাজেল মানে অনুপ্রাণিত। ঈসায়ীদের বিশ্বাস হলো, হজরত ঈসার উম্মতেরা যা স্বচক্ষে দেখেছেন, যার মুখের কথা শুনেছেন তা পাকরুহের পরিচালনায় সাক্ষ্য দিয়েছেন ও লিখেছেন। আর তা-ই হলো ইঞ্জিল শরিফ (১ ইউহোন্না ১:১-৩)। ইঞ্জিল শরিফের মধ্যে রয়েছে ২৭টি সুরা। তার মধ্যে ১ম, ২য়, ৩য় ও ৪র্থ সুরাকে বলা হয় ইঞ্জিল বা সুখবর। পরের ২৩টি সুরার মধ্যে শেষ সুরা হলো প্রকাশিত কালাম বা ভবিষ্যৎবাণী। আর বাকী ২২টি সুরা হলো সমাজ বা জামাতের জন্য শিক্ষামূলক পত্র। এই ২৭টি সুরার লেখক ছিলেন হজরত ঈসার সাথে অত্যন্ত ঘনিষ্ট জন, যারা খুব নিকট থেকে তাঁকে দেখেছেন, তাঁর সাথে থেকেছেন এবং তাঁর শিক্ষা সরাসরি শুনেছেন।
এই লেখকদের মধ্যে একজনই শুধু ব্যতিক্রম ছিলেন। তিনি হলেন হজরত পৌল। তিনি হজরত ঈসার সাথে ছিলেন না ও তাঁর শিক্ষা তিনি সরাসরি শোনেননি। বরং তিনি হজরত ঈসার উম্মতদের অত্যাচার করেছিলেন, তিনি স্তিফান নামে একজন উম্মতকে হত্যা করার কাজে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সেইসময় হজরত ঈসা তাঁকে সরাসরি দর্শন দিয়ে তাঁর সাথে কথা বলেছেন। এই দর্শনের মধ্যদিয়েই তাঁর জীবন পরিবর্তিত হয়। এরপর থেকে তিনি হজরত ঈসার বিষয়ে শিক্ষা দিতে থাকেন, একসময় মসীহের জন্য তাঁর জীবনও উৎসর্গ করেন। পাকরুহের অনুপ্রেরণায় তিনি ইঞ্জিল শরিফের বেশ কয়েকটি সুরা লিখেন।
যদিও বিভিন্ন লেখক ইঞ্জিল শরিফের কথাগুলো লিখেছেন, তথাপি আমরা বিশ্বাস করি যে, তা আল্লাহর কালাম। কেননা আল্লাহর পাকরুহের পরিচালনায় অনুপ্রাণিত হয়েই তাঁরা সেই কথাগুলো লিখেছেন। আগের কিতাব এবং ইঞ্জিল শরিফ মিলে যে একটি কিতাব, তাকে বলা হয় কিতাবুল মোকাদ্দস বা পাককিতাব। এই পাককিতাবের লেখাগুলো সম্পর্কে উল্লেখ করতে গিয়ে, ইঞ্জিল শরিফ বলে, “পাককিতাবের প্রত্যেকটি কথা আল্লাহর কাছ থেকে এসেছে এবং তা শিক্ষা, চেতনা দান, সংশোধন এবং সৎ জীবনে গড়ে উঠবার জন্য দরকারি” (২ তীমথিয় ৩:১৬)।