সংক্ষিপ্ত উত্তর:
না, ইঞ্জিল শরিফে হজরত মুহম্মদের আগমনের কথা লেখা নেই এবং হজরত ঈসা হজরত মুহম্মদের বিষয়ে কোন ভবিষ্যতবাণী করেননি।
ব্যাখ্যামূলক উত্তর:
কেউ কেউ ধারণা করে যে, ইঞ্জিল শরিফে হজরত মুহম্মদের আগমনের কথা লেখা আছে। তারা ইউহোন্না কিতাবে পাকরুহের আগমন বিষয়ে তাঁর নিজের ভবিষ্যত বাণীর কথা উল্লেখ করেন। রেফারেন্স হিসাবে তারা দেখান, ইউহোন্না ১৪:১৫-১৬ আয়াত। এখানে লেখা আছে, “তোমরা যদি আমাকে মহ্বত কর তবে আমার সমস্ত হুকুম পালন করবে। আমি পিতার কাছে চাইব, আর তিনি তোমাদের কাছে চিরকাল থাকবার জন্য আর একজন সাহায্যকারীকে পাঠিয়ে দেবেন।” এই সাহায্যকারীকে অনেকে হজরত মুহম্মদ বলে মনে করে থাকেন।
বিষয়টি গভীরভাবে ভেবে দেখা প্রয়োজন। প্রথমত, যারা উপরিউক্ত আয়াতটি নিয়ে কথা বলেন, পরের আয়াতটি পড়লেই বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যায়। পরের আয়াতে সুস্পষ্টভাবে লেখা আছে যে, সেই সাহায্যকারী হলেন সত্যের রুহ যাঁকে দুনিয়ার লোক দেখতে পায় না এবং তাকে জানেও না। এই দিক থেকে বিচার করলে দেখা যায়, হজরত মুহম্মদকে দুনিয়ার লোক দেখেছে এবং জেনেছে। এই প্রতিজ্ঞা হজরত ঈসা তাঁর উম্মতদের কাছে করেছিলেন। তিনি আরো বলেছিলেন, দুনিয়ার লোক না দেখতে পেলেও কিংবা না জানলেও তোমরা তাঁকে জানো। এখানে তিনি নিজের কথাই বলেছেন। আর সেই সময় হজরত ঈসার উম্মতদের পক্ষে, ৫৭০ বছর পর জন্মগ্রহণ করা হজরত মুহম্মদকে দেখা ও জানার প্রশ্নই আসে না (ইউহোন্না ১৪:১৭)। সুতরাং সেই সাহায্যকারী হজরত মুহম্মদ নন। দ্বিতীয়ত, যে সাহায্যকারী আসার কথা, সেই বিষয়ে কালামে লেখা আছে, “যে সাহায্যকারীকে আমি পিতার কাছ থেকে তোমাদের কাছে পাঠিয়ে দেব, তিনি যখন আসবেন, তখন তিনিই আমার বিষয়ে সাক্ষি দেবেন। ইনি হলেন সত্যের রুহ, যিনি পিতার কাছ থেকে আসবেন আর তোমরাও আমার বিষয়ে সাক্ষি হবে” (ইউহোন্না ১৫:২৬)। তিনি আরো বলেন, “… সেই সত্যের রুহ যখন আসবেন, তখন তিনি তোমাদের পথ দেখিয়ে পূর্ণসত্যে নিয়ে যাবেন। তিনি নিজ থেকে কথা বলবেন না কিন্তু যা কিছু শোনেন তা-ই বলবেন, আর যা কিছু ঘটবে তাও তিনি তোমাদের জানাবেন। সেই সত্যের রুহ আমারই মহিমা প্রকাশ করবেন, কারণ আমি যা করি ও বলি তা-ই তিনি তোমাদের কাছে প্রকাশ করবেন” (ইউহোন্না ১৬:১৩, ১৪)।